সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০১৩

নিঝুম দ্বীপ ভ্রমন



গভীর সমুদ্রে, নীরবে নিভৃতে, শান্ত স্নিগ্ধ রূপ নিয়ে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণে মেঘনা নদীর মোহনায় ১৯৪০ এর দশকে ধীরে ধীরে নিঝুম দ্বীপটি জেগে  ওঠে।  সেখানে কেওড়া-গেওয়া বনের কোলঘেঁষে বয়ে যাওয়া সরু খালের পাড়ে বালুচরে চিক চিক মিষ্টি সূর্যরশ্মি, সাগরবক্ষের নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় অভয়ারণ্য নিঝুম দ্বীপে শীত মৌসুমজুড়ে প্রকৃতির এমন মায়াবীরূপ প্রতিদিনই উপভোগ্য
সমগ্র নিঝুম দ্বীপের প্রায় ৩০০০.০০ একরে মানুষের বসতি রয়েছে এবং অবশিষ্ট অংশে ম্যানগ্রোভ বনায়ন রয়েছে। ইছামতির দ্বীপ বা বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বা চর ওসমান যে নামেই স্থানীয় ভাবে প্রচলিত হোক না কেন - ১৯৭৪ সালে হাতিয়ার তত্কালীন সাংসদ এবং যুব, ক্রীড়া বন প্রতিমন্ত্রী মরহুম আমিরুল ইসলাম ওরফে কালাম দেশী-বিদেশী পর্যটকদের চর ওসমানে নিয়ে যান এবং অবাক বিষ্ময়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে সবাই অবলোকন করলেন এর শান্ত স্নিগ্ধ রূপ এবং এই দ্বীপের নাম দিলেন নিঝুম দ্বীপ। সেই থেকে নিঝুম দ্বীপ হিসেবেই এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।


যাতায়ত ব্যবস্থা
বাসেঃ
ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিন পানামা টিপু নামের লঞ্চ হাতিয়ার উদ্দেশে ছাড়ে সন্ধ্যা ৬টায়। ভাড়া ডেক ২০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ৭০০ টাকা, ডাবল কেবিন ১২০০ টাকা এবং ভিআইপি ১৬০০ টাকা। সময়মতো লঞ্চ ছাড়লে এবং আবহাওয়া ঠিক থাকলে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চটি পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে হাতিয়া  লঞ্চঘাটে পৌছবে। পানামা লঞ্চের যোগাযোগ : ০১৭৪০৯৫১৭২০। ছাড়া বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকেও  সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে চট্টগ্রাম থেকে একটি জাহাজ হাতিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

হাতিয়া তমরুদ্দি লঞ্চঘাট থেকে নানাভাবে নিঝুম দ্বীপে যাওয়া যায়।
নিঝুম দ্বীপে ঘাট দুইটা: নামার ঘাট এবং বন্দর টিলা ঘাট। নামার ঘাটে রিসোর্ট হওয়াতে যেতে হবে মূলত নামার ঘাটে। সুতরাং, তমরদ্দি লঞ্চঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপ নামার বাজারে ট্রলারে সময় লাগবে প্রায় ‍‍‌:৩০ ঘণ্টা এবং বন্দর টিলা ঘাট ঘন্টা, যা নির্ভর করবে জোয়ার ভাটার ওপর।
ট্রলার রিজার্ভ করলে নিম্মের প্যাকেজ ব্যবহার করতে পারেন(তমরুদ্দি লঞ্চঘাট থেকে নামার বাজার আপডাউন):
১০-১৫ জন ৬০০০টাকা
২০-৩০ জন ৮০০০টাকা
৩০-৪০ জন ১০০০০টাকা
ছাউনির ক্ষেত্রে আগেই বলতে হবে।
ঢাকায় যোগাযোগ করুন: অবকাশ পর্যটন লি., আলহাজ সামসুদ্দিন ম্যানসন (নবম তলা), ১৭ নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা।  ফোন : ৮৩৫৮৪৮৫, ৯৩৪২৩৫১, ৯৩৫৯২৩০, ০১৫৫২৩৭২২৬৯।
নিঝুম রিসোর্টে যোগাযোগ করুন: মোঃ মনির হোসেন, ইনচার্জ, নিঝুম রিসোর্ট, হাতিয়া, নোয়াখালী। ফোনঃ ০১৭২৪-১৪৫৮৬৪।

এছাড়া সড়কপথে তমরদ্দী লঞ্চঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপ যেতে চাইলে, তমরদ্দী বাজার থেকে টেম্পুতে জাল্যাখালী (জালিয়াখালী) ঘাট অথবা বাসে করে জাহাজমারা ঘাটে এবং রিক্সাতে জাল্যাখালী (জালিয়াখালী) ঘাট যেতে হবে। তারপর, নদী পারাপারের নৌকাতে বন্দরটিলা ঘাটে পার হয়ে রিক্সা অথবা টেম্পুতে নামার বাজার যেতে হবে।

ট্রেনেঃ
প্রথমে কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে নোয়াখালী রেলওয়ে ষ্টেশন যেতে হবে। এরপরে বাসে নোয়াখালী চ্যায়ারঘাট যেতে হবে, তারপরে সী ট্রাকে হাতিয়া নলছাড়া যেতে হবে। হাতিয়া নলছাড়া থেকে ট্যাক্সিতে জাল্যাখালী (জালিয়াখালী) ঘাট যেতে হবে। তারপর, নদী পারাপারের নৌকাতে বন্দরটিলা ঘাট পার হয়ে রিক্সা অথবা টেম্পুতে নামার বাজার যেতে হবে।

কোথায় থাকবেনঃ
নিঝুম দ্বীপে পর্যটকদের থাকার জন্য অবকাশ পর্যটন নির্মাণ করেছে নিঝুম রিসোর্ট  এবং নামার বাজার মসজিদ কতৃপক্ষ নির্মাণ করেছে মসজিদ বোর্ডিং।
নিঝুম রিসোর্ট--
এই রিসোর্টে নয়টি ডাবল ট্রিপল বেডের রুম এবং ৩টি ডরমিটরি রয়েছে যেখানে মোট ২২টি বেড রয়েছে।  পুরো নিঝুম রিসোর্টে ৬০ জনেরও বেশি সংখ্যক মানুষ একসঙ্গে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।  নিঝুম রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে সর্বক্ষণিক বিদ্যুতের জন্য।
এই রিসোর্টের রুমের ভাড়াঃ
->
দুই বেডের (১টি বাথ রুম) ডিলাক্স রুমের ভাড়া হাজার টাকা।
->
ছয় বেডের ফ্যামিলি রুমের (একটি চার বেডের রুম অন্যটি দুই বেডের রুম এবং দুইটি বাথ রুম) ভাড়া হাজার টাকা।  ১২ বেডের ডরমিটরির (তিনটি বাথ রুম) ভাড়া ২৪০০ টাকা এবং পাঁচ বেডের ডরমিটরির (দুইটি বাথ রুম) ভাড়া ১২০০ টাকা।  রুমে অতিরিক্ত কেউ থাকলে জনপ্রতি গুনতে হবে মাত্র একশ টাকা।

নিঝুম রিসোর্টে থাকার জন্য বুকিং করতেঃ
ঢাকায় যোগাযোগ করুন: অবকাশ পর্যটন লি., আলহাজ সামসুদ্দিন ম্যানসন (নবম তলা), ১৭ নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা।  ফোন : ৮৩৫৮৪৮৫, ৯৩৪২৩৫১, ৯৩৫৯২৩০, ০১৫৫২৩৭২২৬৯।
নিঝুম রিসোর্টে যোগাযোগ করুন: মোঃ মনির হোসেন, ইনচার্জ, নিঝুম রিসোর্ট, হাতিয়া, নোয়াখালী। ফোনঃ ০১৭২৪-১৪৫৮৬৪।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন